আজ রবিবার, ৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতীয় ফুটবল দলের কিট স্পন্সর ‘দৌড়’

admin
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫, ০৬:৪১ অপরাহ্ণ
জাতীয় ফুটবল দলের কিট স্পন্সর ‘দৌড়’

Sharing is caring!

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ও নারী ফুটবল দলের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে অতীতে বেশ কিছু কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলেও খেলোয়াড়দের জার্সি ও আনুসাঙ্গিক সামগ্রির জন্য কখনো কিট স্পন্সর ছিল না। তবে সাবেক ফুটবলার তাবিথ আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বাফুফের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি দায়িত্বগ্রহণের চার মাসের মধ্যেই প্রথমবারের মতো কিট স্পন্সর নিশ্চিত করেছে। দেশিয় স্পোর্টস ওয়্যার ব্র্যান্ড ‘দৌড়’ জাতীয় পুরুষ, নারী ও দুই বিভাগের বয়সভিত্তিক দলের কিট স্পন্সর হয়েছে। কিট স্পন্সর হিসেবে দৌড়ের সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি হয়েছে বাফুফের। গতকাল বিকালে মতিঝিলস্থ বাফুফে ভবনে দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বাফুফের সহ-সভাপতি ও মার্কেটিং কমিটির চেয়ারম্যান ফাহাদ করিম এবং দৌড় এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আবিদ আলম চৌধুরী। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল সহ কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যান্য সদস্যরা। অনুষ্ঠানে তাবিথ আউয়াল বলেন,‘আমরা জার্সির ক্ষেত্রে আবহাওয়া, সেলাই, ধৌত সকল কিছু বিবেচনা করেই কিট স্পন্সর প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করেছি। আমরা চাই বাংলাদেশের নাম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক। আমরা বাংলাদেশের ব্র্য্যান্ডের জার্সি পড়ে খেলি এটা অন্য দেশ ও ক্লাবগুলোকেও জানাবো।’
জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি নিকট ভবিষ্যতে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে তাবিথের। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘আমরা সামনে জাতীয় দলেরর জার্সি কমার্শিয়ালি বিক্রি করবো। সেটা অনলাইন বা রিটেইল (খুচরা) উভয়ভাবে। এই বিষয়ে আরও কাজ করে বিস্তারিত বলতে পারবো।’ দৌড়ের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের পর অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন বাফুফের সভাপতি।

বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জার্সি তৈরি করে। সেই সকল প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনায় না এনে দৌড়ের মতো নতুনকে বেছে নেয়ার কারণ সম্পর্কে বাফুফের মার্কেটিং কমিটির চেয়ারম্যান ও সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম বলেন,‘আমরা তাদের সক্ষমতা, আগ্রহ, যোগ্যতা সকল কিছুই যাচাই বাছাই করেছি। আমরা কোয়ালিটির সঙ্গে কোনো আপোষ করিনি। গত দুই মাস নারী দল ও একটি ক্লাব এই জার্সি পড়ে খেলে ইতিবাচক পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। দুই বছরের চুক্তি থাকলেও এক বছর পর পর্যালোচনার ভিত্তিতে পরের বছরের সিদ্ধান্ত হবে।’

হামজা চৌধুরী ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা ফুটবলার। হামজা বাংলাদেশের হয়ে খেললে বাংলাদেশের জার্সির জনপ্রিয়তা বাড়বে অনেক। হামজার মতো খেলোয়াড় যখন দৌড়ের জার্সি গায়ে খেলবে ও অনুশীলন করবে তখন এর মূল্য অনেক বাড়বে। সেই অনুপাতে বাফুফের প্রাপ্তি কম হয়ে গেল কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে ফাহাদ বলেন, ‘জার্সি যখন কমার্শিয়ালি বিক্রি হবে সেটা অবশ্যই দৌড় ও বাফুফের সাথে লভ্যাংশ ভাগাভাগি হবে।’

ফুটবলে আন্তর্জাতিক ম্যাচে স্পন্সর ব্যবহারের ক্ষেত্রে ফিফার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কাল দৌড়ের সঙ্গে চুক্তি হলেও দুয়েক দিনের মধ্যে ফিফা এবং এএফসির অনুমোদনের জন্য আবেদন করবে বাফুফে। সেই অনুমোদন পেলে জার্সির এক পাশে আট ইঞ্চির মতো জায়গায় দৌড়ের লোগো বসবে। বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের সঙ্গে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে ঢাকা ব্যাংক। অনুশীলনের জার্সিতে বাংলাদেশ নারী দল ঢাকা ব্যাংকের লোগো ব্যবহার করে। এর পাশাপাশি দৌড়ের লোগো ব্যবহারে সমস্যা হবে না বলে জানান ফাহাদ,‘দৌড় জার্সি প্রভাইড করবে।

এর ফলে এক অংশে তাদের লোগো স্থাপিত হবে এর বাইরে আমরা অন্য স্পন্সর ব্যবহার করতে পারবো।’ ফুটবল খেলায় অন্যতম অংশীদার রেফারি। বাংলাদেশের রেফারিদের পোষাক সংকট বেশ পুরনো। কিট স্পন্সর যুগে প্রবেশ করায় রেফারিদের প্রতি আশ্বস্ত করে বাফুফের সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম বলেন,‘আমরা তাদের সমস্যা নিয়ে অবগত। সামনে অন্য কোনো স্পন্সরের মাধ্যমে তাদেরও জার্সি প্রদান করা হবে।’

২০২০ সালে কোভিডের সময় স্পোর্টস ভিত্তিক ব্র্যান্ড দৌড়ের যাত্রা শুরু। মাত্র চার বছরের মধ্যেই বাফুফের সঙ্গে অংশীদার হতে পারায় কৃতজ্ঞ কন্ঠে দৌড়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আবিদ আলম চৌধুরী বলেন, ‘কোয়ালিটির ক্ষেত্রে আমরা আপোষহীন। আমরা আকর্ষণীয় ডিজাইনে জার্সি করবো। বাংলাদেশি অরিজিন প্রবাসী এক ডিজাইনার এ নিয়ে কাজ করছে। জার্সিতে বাংলাদেশের ঐতিহ্য থাকবে।’ আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ নারী দল আরব আমিরাতে খেলবে। ঐ ম্যাচ দিয়েই দৌড়ের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে। দৌড় নারী, পুরুষ উভয় দলের জন্য বুট ও ট্রাভেল ব্যাগ ছাড়াও আনুষাঙ্গিক সকল কিছুই বাফুফেকে সরবারহ করবে।

Sharing is caring!