Sharing is caring!
ডেস্ক রিপোর্ট : নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এছাড়া ১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমির রোড ম্যাপে এফডিআই-জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে ২.৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে বিএনপি। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করতে চায় দলটি। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’-এ বিএনপির প্রতিনিধিদল এই বিষয়টি বুকলেট আকারে তুলে ধরেন। এছাড়া সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পৃথকভাবে বিনিয়োগকারীদের সামনে নিজ নিজ দলের রূপকল্প তুলে ধরে। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট উপলক্ষ্যে তার শুভেচ্ছা বার্তায় ঐক্যকেই ভবিষ্যত্ জাতীয় উন্নয়নের সোপান বলে অভিহিত করেছেন। বৈশ্বিক বর্তমান বাণিজ্যনীতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অতীব সম্ভাবনার কথা ব্যক্ত করেন। এছাড়া প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সরকার এফডিআই তথা বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে আইন করেছিলেন এবং বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের বিনিয়োগবান্ধব নীতিগুলোর কথা তুলে ধরেন তিনি। সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা নীতিগত ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আশ্বাস দিচ্ছি। আমরা ট্যাক্সের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এবং বিনিয়োগকারীদের অধিকার রক্ষার জন্য একটি প্রয়োজনীয় বিনিয়োগকারী সুরক্ষা প্রবিধান প্রবর্তন করব।
বিএনপির ‘১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমির’ ঘোষণা সংবলিত বুকলেটে বলা হয়, সরকার গঠন করতে পারলে দেশের মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধির জন্য অতীতের চেয়েও ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে চায় বিএনপি। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ তথা এফডিআইকে বিশ্ববাসীর নিকট জনপ্রিয় করতে ১১টি রেগুলেটরি পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বিএনপি। যার মধ্যে রয়েছে, বিডাকে কার্যকরী করা, ভিসা-ওয়ার্ক পারমিট বিধির আধুনিকীকরণ, বিনিয়োগকারীদের জন্য সপ্তাহে ২৪ ঘণ্টা সেবা চালু করা, স্বয়ংক্রিয় মুনাফা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে দক্ষ জনশক্তির ব্যবস্থা করা, বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন ইত্যাদি।
জামায়াতের ‘কলিং বাংলাদেশ’:ইনভেস্টমেন্ট সামিটে জামায়াতের প্রতিনিধিরাও ‘কলিং বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি বুকলেট দেন। বৈঠকে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশসহ বিভিন্ন সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে অত্যন্ত খোলামেলা আলোচনা ও মতবিনিময় হয়। এ সময় দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বিনিয়োগকারীদের সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়া হবে। তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে গুড গর্ভনেন্স, সততা, নিষ্ঠা এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে অর্থনীতি ও ব্যাবসায়িক নীতি প্রণয়ন করে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। দেশের জনগণ যদি আগামীতে ভোটের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীকে রাষ্ট্র ক্ষমতা প্রদান করেন, তাহলে আমরা দুর্নীতি ও বৈষম্যমুক্ত বিনিয়োগবান্ধব একটি অর্থনীতি দেশকে উপহার দেব ইনশাআল্লাহ।
এনসিপির ‘ইনভেস্টমেন্ট হেভেন’: বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ২০৩৫ সালের বাংলাদেশের ভিশন কেমন হবে সেটি তুলে ধরে। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, বাংলাদেশ আগামীতে ‘ইনভেস্টমেন্ট হেভেনে’ পরিণত হবে। বাংলাদেশকে টপ ১৫ কান্ট্রির মধ্যে নিয়ে যাব। জাতীয় নাগরিক পার্টি যদি ক্ষমতায় আসে তবে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে। কোন কোন সেক্টরে কাজ করা হবে সেটা নিয়ে ইনভেস্টরদের সঙ্গে কথা হয়েছে। যারা বেকার রয়েছে তাদের চাকরি নিশ্চিতে কাজ করব। তিনি আরো বলেন, ব্লু ইকোনোমিকে কীভাবে শক্তিতে রূপান্তরিত করা যায় সে সম্পর্কে কথা বলেছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যতদিন কাজ করবে আমরা তাদের সহায়তা করব। বাংলাদেশের ফাইন্যান্স সেক্টর নতুন করে গড়ে তুলব। ভবিষ্যতে যদি কেউ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
Sharing is caring!