আজ বৃহস্পতিবার, ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রাফিতি বাংলাদেশ

admin
প্রকাশিত নভেম্বর ২৫, ২০২৪, ০৮:৫৩ অপরাহ্ণ
গ্রাফিতি বাংলাদেশ

Sharing is caring!

ডেস্ক রিপোর্ট : যখন চারিদিকে মৃত্যু আর মৃত্যু লাশ আর লাশ

যখন দিকে দিকে টগবগে বিক্ষোভ বিস্ময়

প্রতিরোধের উত্তাপে ফুটন্ত বিপ্লব

সেই জুলাই বিপ্লবের আগুনঝরা দিন!

হৃদয় নিংড়ানো রঙের আঁচড়ে
তখনই জন্মালো গ্রাফিতি!
এমন এঁকেছে কি পৃথিবীর কোনো বিপ্লবের তুলি!

ঢাকার প্রতিটি দেয়াল গ্রাফিতির
একেকটি বর্ণিল পৃষ্ঠা
প্রতিবাদ-বিক্ষোভের বিশাল ক্যানভাস
হৃদয়গ্রাহী সেøাগান, কবিতার বারুদ যেনো
কোটি কণ্ঠের সমস্বর!
বৈষম্যহীন আন্দোলনের এ এক শিল্পিত রূপ!

শিল্পকর্মে জ্বলে উঠলো একেকটি বাক্য
একেকটি সেøাগান, তীব্র তীক্ষ্ম বুলেট,
বিঁধে গেলো ফ্যাসিস্ট স্বৈরিনীর বুকের শিরায়
আগ্নেয়াস্ত্র পরাজিত এসব গ্রাফিতির
রেখার কাছে!

রাজপথের দেয়াল প্রাসাদের পাঁজর এবং পিচপথের কালো দেহে গ্রাফিতির সমগ্রতায় জড়ানো সাহসের প্রাণ!
চোখ উল্টিয়ে জগতবাসী দেখলো-
দুনিয়ার গ্রাফিতির রাজধানী বাংলাদেশ!

আমাদের শিশুদের হাতেও মাখামাখি গ্রাফিতি-বুলেটের রঙ
কচিকণ্ঠে মুহূর্মুহু সেøাগান –
স্টেপ ডাউন হাসিনা
ক্ষীণহাতে গ্রাফিতির তুলি
যেনো রাঙাবে পৃথিবীর মুখ!

এ এক নতুন গল্প, নতুন পা-ুলিপি
প্রথম দেখা পিচঢালা রাস্তায়, রাজপথে
তারপর দেয়ালে দেয়ালে সর্বত্র!
এমনকি ছাত্র যুবাদের বুকে পিঠে মুখেও
গ্রাফিতি উৎসব
প্রাণের সবটুকু ঢেলে মিটিয়ে দিতে চাইলো স্বৈরাচারীর নৃশংস পদভার!

মানুষের বুক থেকে ক্ষোভ লাফিয়ে উঠলো
দেয়ালে, প্রাসাদের পাঁজরে,পথপ্রান্তের শরীরে, বিপনি বিতানের সাটারে
একেকটি মুখ যেনো একেকটি তিতুমীর
একেকটি বালক যেনো একেকজন
মোহাম্মদ বিন কাসিম
একেকজন যুবক একেকজন খান জাহান
শাহ জালালের পাগড়ির ভেতর থেকে যেনো বেরিয়ে এলো বীরত্বের নিশান!
কোনো কোনো দিন শহর শূন্য হলেও
দেয়ালে জাগ্রত এই বিস্ময় গ্রাফিতি
দিনভর এবং সারারাত ছড়িয়ে দেয় প্রতিবাদ, বিক্ষোভ-আগুন
জগতে প্রতিবাদের ইতিহাসে এ এক নতুন হাতিয়ার!

পৃথিবীর চোখ থেকে উড়ে এলো বিস্ময়!
তরুণ বিপ্ল­বীর অবিশ্বাস্য সাহসী উচ্চারণ- পেছনে পুলিশ সামনে স্বাধীনতা!
সহসা কেঁপে উঠলো বাংলাদেশের বুক
এবং একটি মাস তার শরীর ছাড়িয়ে দীর্ঘ হলো হয়ে উঠলো ৩৬ জুলাই
হেসে উঠলো গ্রাফিতির আনন্দে!
এমন বিস্ময় জাগানিয়া বিপ্ল­বের সচিত্র উত্তাপ একবারই দেখলো পৃথিবী

কবিতা গানে গ্রাফিতি হলেন নজরুল –
কারার ঐ লৌহ কপাট
ভেঙে ফেল কররে লোপাট
রক্ত জমাট
শিকল পুজার পাষাণ বেদী
আরও আরও নজরুলীয় বুলেট-
দুর্গমগীরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশিথে যাত্রীরা হুশিয়ার
কিংবা বল বীর বল চির উন্নত মম শির
এভাবেই কবিতার প্রতিটি পঙক্তিতে ছিন্নভিন্ন হলো পাষাণীর বুক
কবিতা হয়ে উঠলো জগতের ফ্যাসিস্ট পতনের নান্দনিক হাতিয়ার!
প্রতিবাদ প্রতিরোধ এবং হৃদয়চেরা ধ্বনিআঁকা
গ্রাফিতির দেয়াল ফ্যাসিস্ট স্বৈরিণীর মরণচিহ্ন
তার সমস্ত বাণী বচন এবং ষড়যন্ত্রের জাল মুহূর্তে মুছে দেবার অনন্য রঙ, প্রতিটি গ্রাফিতি তার পালিয়ে যাওয়ার ভয়ংকর নোটিশ!
গ্রাফিতির মতো এমন অস্ত্র আমি আর দেখিনি!

Sharing is caring!