চলতি সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই মানচিত্রটি ছড়িয়ে পড়ে। এতে ফিলিস্তিন, জর্ডান, সিরিয়া ও লেবাননের বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড কথিত ‘বৃহত্তর ইসরাইলের’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই মানচিত্র প্রকাশের পরই নিন্দার ঝড় উঠেছে। অধিকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র নাবিল আবু-রুদেইনে ওই মানচিত্রকে সব আন্তর্জাতিক আইন ও প্রস্তাবের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, ইসরাইলের দখলদারির নীতি, অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের হামলা এবং আল-আকসা মসজিদের বিরামহীন অবমাননা বন্ধ করতে জরুরি ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরাইলের পক্ষ থেকে প্রকাশিত মানচিত্রকে ‘উস্কানিমূলক ও ভিত্তিহীন’ বলে উল্লেখ করেছে। তারা বলছে, বর্ণবাদের ভিত্তিতে নেয়া ইসরাইলি পদক্ষেপ যেমন জর্ডানের সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করতে পারবে না, তেমনি তা ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকারও লঙ্ঘন করতে পারবে না।
সেইসঙ্গে ইসরাইল সরকারকে অবিলম্বে এ ধরনের উস্কানিমূলক পদক্ষেপ ও বেপরোয়া বক্তব্য-বিবৃতি বন্ধ করতে বলেছে জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তা না হলে এসব পদক্ষেপ কেবল মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করবে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
এছাড়া সৌদি আরবও ওই ইসরাইলি মানচিত্রের নিন্দা ও প্রত্যাখ্যান করেছে সৌদি আরব। রিয়াদ বলেছে, এই ধরনের চরমপন্থি দাবি ইসরাইলের উদ্দেশ্য প্রকাশ করে, যা তাদের দখলদারিকে সুসংহত করতে, রাষ্ট্রগুলোর সার্বভৌমত্বের ওপর প্রকাশ্য আক্রমণ চালিয়ে যেতে এবং আন্তর্জাতিক আইন ও নিয়ম লঙ্ঘন করতে চায়।
সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই অঞ্চল এবং জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলের আইন ও নিয়ম লঙ্ঘন বন্ধে তাদের ভূমিকা পালন করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে। এ ছাড়া অন্য দেশের সার্বভৌমত্ব এবং তাদের সীমানার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে সৌদি। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মানচিত্রটিকে ‘আন্তর্জাতিক বৈধতা এবং প্রস্তাবের স্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে। তবে এই ধরনের কর্মকাণ্ড শান্তি প্রচেষ্টাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে সতর্ক করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
একইভাবে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মানচিত্রটিকে ইসরাইলের বৃহত্তর সম্প্রসারণবাদী এজেন্ডার অংশ হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে বলেছে, এই ধরনের চর্চা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছানোর প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করবে। দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান অর্জন এবং একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক উদ্যোগগুলোকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।