আজ রবিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্পের হুমকির পর গ্রিনল্যান্ডে সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা ফ্রান্সের

admin
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫, ০৬:৩৫ অপরাহ্ণ
ট্রাম্পের হুমকির পর গ্রিনল্যান্ডে সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা ফ্রান্সের

Sharing is caring!

ডেস্ক রিপোর্ট : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড দখলের পরিকল্পনা এবং সামরিক হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ফ্রান্স সেখানে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারোট এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান।

ট্রাম্প ২০২৩ সালের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর একাধিকবার গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণের কথা বলেছেন। প্রয়োজনে সামরিক শক্তি ব্যবহারের হুমকিও দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের এই অবস্থানের ফলে ইউরোপীয় দেশগুলো বিশেষ করে ডেনমার্ক ও গ্রিনল্যান্ড গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারোট বলেছেন, ‘গ্রিনল্যান্ডে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে ডেনমার্কের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তবে এখনই কোনো সামরিক ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা নেই। তবে গ্রিনল্যান্ডের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়লে ইউরোপ অবশ্যই পদক্ষেপ নেবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ড বর্তমানে আন্তর্জাতিক রাজনীতির নতুন সংঘাতের ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে। আমাদের সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা উচিত যাতে অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা তৈরি না হয়।’

ট্রাম্পের ক্রমবর্ধমান হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ডেনমার্ক ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়। এর মালিক এখানকার বাসিন্দারা।’ ট্রাম্পের সামরিক হুমকি মোকাবিলার জন্য ডেনমার্ক আর্কটিক অঞ্চলে প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করতে ২ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করছে।

মাত্র ৫৭ হাজার জনসংখ্যার দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের বেশিরভাগ অংশ বরফে আচ্ছাদিত হলেও এটি বিরল খনিজ সম্পদের ভাণ্ডার। ব্যাটারি এবং উচ্চ-প্রযুক্তির যন্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় এই খনিজগুলোর কারণে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দ্বীপটির গুরুত্ব অনেক বেশি। ট্রাম্প প্রশাসন গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

এটি প্রথমবার নয় যে ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণের কথা বলেছেন। ২০১৯ সালে তার প্রথম প্রেসিডেন্সি মেয়াদেও তিনি দ্বীপটি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তখনও ডেনমার্ক দৃঢ়ভাবে জানিয়ে দেয় যে গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়।

গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুট এগিদ ডেনমার্ক থেকে আরও স্বাধীনতা অর্জনের চেষ্টা করছেন, তবে তিনিও দ্বীপটি বিক্রির প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। যদিও গ্রিনল্যান্ডের অর্থনীতি ডেনমার্কের সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল, তবুও দ্বীপটির প্রাকৃতিক সম্পদ এবং ভৌগোলিক অবস্থান এটিকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে।

ট্রাম্পের সামরিক হুমকি এবং গ্রিনল্যান্ড নিয়ে তার আগ্রহ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। ফ্রান্সের সম্ভাব্য সেনা মোতায়েন এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া ইঙ্গিত দিচ্ছে যে গ্রিনল্যান্ড ভবিষ্যতে আরও বড় ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার ময়দানে পরিণত হতে পারে।

Sharing is caring!