Sharing is caring!
ডেস্ক রিপোর্ট : যুক্তরাজ্য জুড়ে ঝড় বার্টের প্রভাবে কমপক্ষে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি টানা বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ট্রেন ও ফ্লাইট বাতিলে বিপর্যস্ত জনজীবন। নদীর পানি উপচে প্লাবিত হয়েছে ওয়েলসের নিম্নাঞ্চল। এতে বেশকিছু গাড়ি পানিতে ভাসতে দেখা গেছে। ঝড়ে সৃষ্ট বিপর্যয়ের নানা মুহূর্ত ধরা পড়েছে ছড়িয়ে পড়া নানা ভিডিওতে। কোথাও উদ্ধারকারীদের গভীর পানিতে নেমে পোষা প্রাণীদের উদ্ধার করতে দেখা গেছে। কোথাও আবার বাসিন্দাদের বালতি নিয়ে ঘরের ভেতর থেকে পানি বের করতে দেখা গেছে। এতে বলা হয়, ঝড়ের সময় বৃটেনজুড়ে একাধিক স্থানে প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। দক্ষিণ ইংল্যান্ডের উইনচেস্টারে গাড়ির উপরে গাছ ভেঙে মারা গিয়েছেন ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ। নর্দাম্পটনশায়ারে দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়েছে আরও একজনের। অন্যদিকে পশ্চিম ইয়র্কশায়ারে ৩৪ বছরের এক ব্যক্তি মারা গিয়েছেন গাড়ির ধাক্কায়। ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা পিএ মিডিয়া আরও জানিয়েছে যে, গত কয়েকদিন ধরে যুক্তরাজ্যে ঝড়ের আঘাতে আরও দুজন নিহত হয়েছেন। তবে সবকটি দুর্ঘটনার সঙ্গে ঝড়ের সরাসরি যোগ আছে কিনা তা এখনও পরিষ্কার নয়। বৃষ্টির প্রকোপে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে প্রায় তিনশো ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। গোটা ব্রিটেনে বাতিল হয়েছে প্রায় ১২০০ ফ্লাইট। এছাড়া লন্ডন ও ওয়েলসের মধ্যে বহু ট্রেনের শিডিউল পরিবর্তন করা হয়েছ। এক্সেটার থেকে ওকেহাম্পচন ও বার্নস্টেপলের মধ্যবর্তী ট্রেন চলাচলও ব্যাহত হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইউরোপের আবহাওয়া দপ্তরগুলো থেকে প্রাপ্ত ৫৩টি রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। পাশাপাশি মধ্য, দক্ষিণ ও পূর্ব ইংল্যান্ড এভং উত্তর আয়ারল্যান্ড ও পশ্চিম স্কটল্যান্ডে ভারী বাতাস বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস ঘিরে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। স্কটিশ এবং সাউদার্ন ইলেকট্রিসিটি নেটওয়ার্কের ওয়েবসাইট অনুসারে, সপ্তাহান্তে ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার তার এক্সের পোস্টে লিখেছেন,‘জরুরী পরিষেবাগুলিকে ধন্যবাদ যারা মানুষকে রক্ষা করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। আমরা তাদের পাশে রয়েছি।’ বার্টের সাথে যুক্ত ঠান্ডা বাতাস পশ্চিম ইউরোপের কিছু অংশকে প্রভাবিত করতে পারে। জার্মানি এবং ফ্রান্সের কিছু অংশে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অপর এক খবরে বলা হয়, ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্র দ্বীপে ভারি বর্ষণের চার দিন পরেও এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট ভূমিধসে নিখোঁজ হওয়া ৭ ব্যক্তির এখনও কোনো সন্ধান পায়নি উদ্ধারকারীরা। মঙ্গলবার এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন বন্যা ও ভূমিধসে দেশটিতে গত কয়েক দিনে অন্তত ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ভারী বর্ষণে দ্বীপটির বেশ কয়েকটি এলাকায় ভূমিধস হয়েছে। এর মধ্যে করো, পাদাং লওয়াস এবং তপানুলি সেলতান নামক এলাকায় বেশ কয়েকজন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র আব্দুল মুহারি বলেছেন, এসব এলাকায় ভূমিধসে নিহত হয়েছেন ১১ বাসিন্দা। অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়ার ফলে সৃষ্ট বন্যায় আরও চার ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলেও তথ্য দিয়েছেন আব্দুল মুহারি। এমন নাজুক পরিস্থিতিতে ওই অঞ্চলে উদ্ধার তৎপরতা বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সুমাত্রা দ্বীপে উদ্ধারকর্মীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে পুলিশ এবং সামরিক কর্মকর্তারা। এখনও নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান অব্যাহত রয়েছে। তবে ক্রমাগত বৃষ্টিপাতের ফলে উদ্ধারকাজে ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানিয়েছেন আব্দুল মুহারি। তিনি জানিয়েছেন, এখনও ওই এলাকাগুলোতে সকাল-সন্ধ্যা বৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে উদ্ধারকাজে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। তবে নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত এই তৎপরতা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন তিনি। প্রবল বন্যা এবং ভূমিধসে গ্রামের বসতবাড়ি, মসজিদ এবং আবাদি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কয়েকটি গ্রামের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
Sharing is caring!