এর আগে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করেছেন। এটি মার্কিন প্রেসিডেন্টের দ্রুত এই সংঘাত অবসনের প্রতিশ্রুতির দিকে প্রথম বড় পদক্ষেপ। যদিও ট্রাম্প জানিয়েছে, তিনি ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান করা বাস্তবসম্মত বলে মনে করেন না এবং কিয়েভ তার সম্পূর্ণ ভূমি ফিরে পাবে তারও সম্ভাবনা কম। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ার নিয়ন্ত্রণ নেয় রাশিয়া। এরপর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় অভিযান শুরু করে।
ইউক্রেন দখলকৃত অঞ্চল থেকে রাশিয়ার সরে যাওয়ার দাবি জানিয়েছে এবং বলেছে, মস্কো যাতে আবার আক্রমণ না করে, তার জন্য তাদের ন্যাটো সদস্যপদ বা সমতুল্য নিরাপত্তার গ্যারান্টি পেতে হবে। জেলেনস্কির মতে, পুতিন যুদ্ধ শেষ করার জন্য নয় বরং রাশিয়ার ওপর থেকে কিছু বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য এবং মস্কোর সামরিক বাহিনীকে পুনরায় সংগঠিত করার জন্য যুদ্ধবিরতি চুক্তির আলোচনার টেবিলে বসতে চেয়েছেন। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আসলে তিনি এটাই চান। যুদ্ধবিরতির দিয়ে তিনি বিরতি, প্রস্তুতি, প্রশিক্ষণ, কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে চান।’ ট্রাম্প বলেছেন, পুতিনের সঙ্গে তার এক ঘন্টারও বেশি সময় ধরে ‘ভালো আলোচনা’ হয়েছে। অন্যদিকে ক্রেমলিন জানিয়েছে, এটি প্রায় দেড় ঘন্টা স্থায়ী ছিল।
ইইউর বাদ পড়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি জার্মানির : ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনা থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বাদ দেয়া হলে, এটি আমেরিকার সাথে ইউরোপের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মোড় নিতে পারে, জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেছেন। ‘এটি ট্রান্সআটলান্টিক সম্পর্কের জন্য একটি ঐতিহাসিক, গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত প্রমাণিত হতে পারে, যার পরে আমরা ভিন্ন পথ বেছে নেয়ার ঝুঁকি নিই,’ তিনি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে উল্লেখ করেন।
‘আমরা যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি তা নির্ধারণ করবে যে আমরা শান্তিতে বাস করব নাকি সংকটের পরিস্থিতিতে থাকব, এবং এটি আমাদের এবং ইউরোপে ভবিষ্যত প্রজন্মের ভবিষ্যতকেও সংজ্ঞায়িত করবে,’ পিস্টোরিয়াস উল্লেখ করেন। ‘আমাদের শক্তির অবস্থান থেকে আলোচনা করা দরকার,’ তিনি আরও বলেন। জার্মান প্রতিরক্ষা প্রধান জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, ইউরোপ এবং ইউক্রেনকে সংঘাত সমাধানের আলোচনার অংশ হওয়া উচিত। তার মতে, ‘আঞ্চলিক সমস্যা’ এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনার টেবিলে কথা বলা উচিত।
রাশিয়া বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ফিরে আসবে : ইউক্রেনের সংঘাতের মীমাংসার পর রাশিয়া আবারও বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং ইউরোপীয় নিরাপত্তার সাথে সম্পূর্ণরূপে একীভূত হবে, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান কোসুথ রেডিওকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন।
অরবান নিশ্চিত করেছেন যে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর ভরসা করছেন, যিনি ইউক্রেনের সংঘাতের অবসানের জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য রাশিয়ার নেতা ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে দেখা করার পরিকল্পনা করছেন। ‘আমি বিশ্বাস করি যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যদি শান্তি আলোচনার টেবিলে (ইউক্রেন সম্পর্কে) একটি চুক্তিতে পৌঁছান, তাহলে রাশিয়া আবারও বিশ্ব অর্থনীতি এবং ইউরোপীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পুনরায় একীভূত হবে,’ তিনি বলেন। অরবান আরও স্মরণ করিয়ে দেন যে, হাঙ্গেরি দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পক্ষে কথা বলে আসছে, যা ইউরোপীয় অর্থনীতির জন্য বিরাট ক্ষতিকর, যার মধ্যে জ্বালানির দাম বৃদ্ধিও রয়েছে। অতএব, তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, ইউরোপীয় অর্থনীতিতে, যার মধ্যে ইউরোপীয় জ্বালানি ব্যবস্থাও রয়েছে, রাশিয়ার একীভূতকরণ ‘হাঙ্গেরির অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে।’
সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস, তাস।